+966503732098 +8801977610674

hajiservicebd@gmail.com​

Haji Service.com

উমরা সম্পন্ন করতে সাধারণত কমপক্ষে ২ ঘন্টা সময় লাগে। তবে কিছু বেশি বা কম সময়ও লাগতে পারে।

যদি সরাসরি জেদ্দায় যান, উমরার সফর শুরুর জন্য এয়ারপোর্টে যাওয়ার আগেই নিজ বাড়িতে গোসল করে নিন। অবাঞ্চিত চুল- নখ পরিষ্কার করে নিন।
[যদি মদীনা মুনাওওয়ারাতে আগে যাওয়া হয় তাহলে অবশ্য আপনার নিজ বাসায় ইহরাম বাঁধতে হবে না। মদীনা পৌঁছে মক্কায় রওনার আগে (মদীনাতে) হোটেলেই ইহরাম বাঁধতে পারবেন।]
গোসল করার পর ইহরাম বাঁধুন। ইহরাম বাঁধার নিয়ম :
পুরুষরা: দুই টুকরো কাপড় পড়তে হবে। মহিলাগণ: বিশেষ কোনো কাপড় নেই। স্বাভাবিক পোশাক পড়বে।
তারপর দুই রাকআত নামায পড়তে হবে। পুরুষরা নামায শেষে টুপি খুলে ফেলবে। তারপর ইহরামের নিয়ত করুন। বলুন:

اللَّهُمَّ إِنِّي أُرِيْدُ الْعُمْرَةَ فَيَسِرْهَا لِيْ وَتَقَبَّلْهَا مِنِيْ
আল্লাহুম্মা ইন্নী উরীদুল উমরাতা ফা ইয়াস্ সিরহালী ওয়া তাকাব্বালহা মিন্নী
অর্থ: হে আল্লাহ আমি উমরার উদ্দেশ্যে ইহরামের নিয়ত করছি। তা কবুল কর আর আমার জন্য সহজ করে দাও।
তারপর লাব্বাইক পড়ুন:
لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنَّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لَا شَرِيكَ لَكَ
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।
অর্থ: আমি উপস্থিত হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত। আমি উপস্থিত, আপনার কোন শরীক নেই, আমি উপস্থিত। নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা, নেয়ামত এবং সাম্রাজ্য আপনারই। আপনার কোনো শরিক নেই।
এখন আপনি ইহরামের ভেতর প্রবেশ করলেন বা ইহরাম বাঁধলেন।

ইহরামে প্রবেশের পর নিচের কাজগুলো করা নিষিদ্ধ:

➤যাবতীয় যৌনকাজ এমনি স্বামী স্ত্রীর এ সম্পর্কিত আলাপ
➤আতর/সেন্ট লাগানো
➤কারো সাথে ঝগড়া-বিবাদ করা
➤চুল/নখ কাটা
➤ক্স মশা-মাছি মারা
➤জেদ্দা পৌঁছে হোটেলে গিয়ে রেস্ট নিন। গোসল করতে পারলে করুন (ভালো), জরুরি নয়। তবে ইহরামে প্রবেশের পর গোসল করলে সাবান ব্যবহার করা যাবে না।

➤ ইহরামরত অবস্থায় সুগন্ধিযুক্ত সাবান ব্যবহার করা যাবে না। যোকোনা সাবান ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই উত্তম।
➤পুরুষরা ইহরামরত অবস্থায় স্পঞ্জ জাতীয় স্যান্ডেল পড়বে (যেন পায়ের ➤উপরের অংশ ঢেকে না যায়)। স্যান্ডেল রাখার একটি ব্যাগ সঙ্গে রাখা উচিত যেটার ভিতর স্যান্ডেল সহজে ক্যারি করা যাবে (এতে স্যান্ডেল রাখা নিয়ে টেনশনমুক্ত থাকা যায়)।
➤ইহরাম বাঁধার পর বেশি বেশি “লাব্বাইক………..(পুরোটা)” পাঠ
করবেন।
তারপর (আরামের পর) হোটেল থেকে ওযু অবস্থায় মসজিদুল হারামে রওনা করবেন। তাওয়াফ ওযু ছাড়া করা যাবে না! তাওয়াফ ওযু অবস্থায় করতে হবে।
কাবা দেখে দোআ করবে, দোআ কবুলের বিশেষ সময় এটি। নিজের দোআ লিস্ট আগেই রেডি রাখুন। সেটি দেখে নেবেন দরকার হলে। যত সময় প্রয়োজন নিন। মন ভরে দোআ করুন।
তারপর তাওয়াফ শুরু করার জন্য সবুজ লাইটের কাছে চলে যান।

এখন লাব্বাইক… পড়া বন্ধ করে দিন। সেখানে গিয়ে কালো পাথরের বরাবর না দাঁড়িয়ে একটু বামে দাঁড়ান। তাওয়াফের নিয়ত করুন (মনে মনে নিয়ত করাই যথেষ্ট যে তাওয়াফ করবেন)।
পুরুষরা উমরার তাওয়াফের শুরুতে এমনভাবে ইহরামের কাঁপড় পড়বেন যেন ডান কাঁধ খালি বের হয়ে থাকে। তার মানে, বাম কাঁধের উপর থেকে কাপড়টি ডান বগলের নিচ দিয়ে বের করে আবার বাম কাঁধের উপর রাখবেন। এটিকে ইত্তেবা বলে। পুরো তাওয়াফে উপরের কাপড়টি এমন অবস্থায় থাকবে। তাওয়াফ শেষে ডান কাঁধ ঢেকে নিন।
তারপর (সবুজ লাইটের ওখানে) কাবার দিকে মুখ করে তাওয়াফের নিয়ত করার পর প্রথমে নামাযের শুরুতে হাত তোলার মতন করে হাত তুলে পড়ব, বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ। একে ইস্তেকবাল বলে। তারপর কালো পাথরকে ধরার ইশারা করে সেটি (একবার) চুমু দিন।

তারপর তাওয়াফ শুরু করুন। অর্থাৎ বাম কাঁধ কাবার দিকে থাকবে। হাঁটা শুরু করবেন কাবা প্রদক্ষিণের জন্য চেহারা কাবার
দিকে ফেরাবেন না। সোজা রাখবেন। তাওয়াফের সময় চেহারা কাবার দিকে ফেরাতে হয় না।

প্রথম তিন তাওয়াফে পুরুষরা রমল করবে। অর্থাৎ, একটু বাহাদুরের মতন চলা। খেয়াল রাখবেন এভাবে হাঁটার সময় অন্য কারো যেন কষ্ট না হয়। বাকি চার তাওয়াফে রমল নেই স্বাভাবিকভাবে হাঁটবেন।

যখন প্রথম প্রদক্ষিণটি শেষ হবে আবার কালো পাথর চুম্বন করবেন। একদম স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে দু হাত দিয়েই করতে হবে – এমন নয়। ভীড় থাকে বলে সবুজ লাইটের ওখানে যতটুকু সহজে সম্ভব কাবার দিকে ফিরে “বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার

ওয়ালিল্লাহিল হামদ” পড়ে কালো পাথরকে হাত দিয়ে ইশারায় চুমু দেবেন – দ্বিতীয় প্রদক্ষিণ শুরু হল। এভাবে ৭টি প্রদক্ষিণ

করে আবার ইস্তিলাম করবেন ইশারায় কালো পাথর চুমু

দেবেন।

তাওয়াফের সময় রুকনে ইয়ামানী ও হাজরে আসওয়াদ (জায়গাটি বোঝার জন্য প্রচ্ছদের ছবিটি দেখতে পারেন ) এ দুইয়ের মাঝের জায়গায় পড়ুন:
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً
وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থ: হে আমার রব! আমাকে দুনিয়াতে কল্যাণ দান কর, আখেরাতেও কল্যাণ দান কর এবং আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও।
তাওয়াফ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা:

তাওয়াফের সময় দোআ, যিকির ইস্তেগফার

আমাদের সাইটে কী দোআ করবেন প্রবন্ধ দেখতে পারেন। আল্লাহর দিকে মনোযোগী থাকাটাই উচিত। কথা বলা যাবে কিন্তু খামাকা কথা বলা উচিত নয়। পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে দোআ, যিকির করুন। আগে থেকেই যদি দোআর জন্য লিস্ট রেডি রাখা হয়, সেটি এ সময়ে খুব সহায়ক হয়ে থাকে। তাওয়াফের পুরো সময়টিতে লিস্ট দেখে দেখে দোআ করা যায়।
মাকামে
তাওয়াফ শেষে দুই রাকাআত ওয়াজিব নামায পড়ুন ইব্রাহীমের পেছনে পড়তে পারলে ভালো। কিন্তু তা জরুরি নয়। অন্য দিকেও মসজিদের যেকোনো স্থানে পড়তে পারেন। মাকরূহ সময়ে অবশ্য এ নামাযটি পড়বেন না। যেমন: সময়টি যদি আসরের
পর হয়ে থাকে তাহলে এ দুই রাকআত নামায মাগরিবের নামাযের পর পড়বেন।
তারপর সাফা-মারওয়ার দিকে যাবেন। যাওয়ার পথে যমযম পড়বে। এখানে দাঁড়িয়ে যমযম খাবেন। দোআ করবেন খুব। যমযম খাওয়ার দোআটি জানলে ভালো!
اللَّهُمَّ إنِّي أَسْأَلُكَ عِلْماً نَافِعًا وَرِزْقاً وَاسِعاً
وَشِفَاءَ مِنْ كُلَّ دَاءٍ
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা ইলমান নাফি’আ ওয়া রিযকান ওয়াসি’আ ওয়া শিফা আমমিন কুল্লি দা।
অর্থ: হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার নিকট উপকারী ইলম এবং হালাল প্রশস্ত রিজিক এবং সব রোগের শিফা চাচ্ছি।
সাফায় সাঈ শুরুর আগে আরেকবার ইস্তেলাম (কালো পাথর চুম্বন করতে হবে)। এটাও দূর থেকে করলে হবে। যমযম খেয়েই কাবার দিকে মুখ করে ইস্তেলাম করে নেবেন।
সাফাতে সাঈর সময় কুরআনের আয়াতটি পড়তে পারেন:
إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أو أَعْتَمَرَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِمَا ۚ وَمَن
تَطَوَّعَ خَيْرًا فَإِنَّ اللَّهَ شَاكِرٌ عَلِيمٌ ١٥٨
অর্থ: নিশ্চয়ই সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং যে ব্যক্তিই বাইতুল্লাহর হজ্জ করবে বা উমরা করবে তার জন্য এ দুটোর প্রদক্ষিণ করাতে কোনও গুনাহ নেই। কোনও ব্যক্তি স্বত:স্ফূর্তভাবে কোনও কল্যাণকর কাজ করলে আল্লাহ অবশ্যই গুণগ্রাহী (এবং) সর্বজ্ঞ।
আর দেখবেন সবুজ বাতি আছে মাঝে ওখানে পুরুষরা একটু দ্রুত হাঁটবে — মৃদু দৌঁড়াবে। মহিলাগণ নয়। সাফা-মারওয়া সাঈ করার সময় অন্য যেকোনো দোআ, যিকির করতে পারবেন।
সাঈ করার সময় ওযু জরুরি নয়, থাকলে ভালো। সাঈ শুরু হয় সাফাতে, শেষ হয় মারওয়ায়।
সাঈ শেষে দু রাকআত নামায পড়ুন। তবে এ নামাযটি পড়া ওয়াজিব বা জরুরি নয়।
সাঈ শেষে পুরুষগণ মাথা হলক করবে (সম্পূর্ণরূপে কামিয়ে
ফেলবে,
এটি উত্তম) অথবা এক চতুর্থাংশ কেটে ফেলবে। মহিলাগণ এক ইঞ্চি চুল আগা থেকে কাটবে। এখন ইহরাম থেকে বের হয়ে গেলেন।
উমরা সমাপ্ত হল। আলহামদুলিল্লাহ। ইহরামরত অবস্থায় যে জায়েয কাজগুলো নিষিদ্ধ ছিল তা এখন করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *